গহীন জঙ্গলে সাফারি ভ্রমন-২
30/05/2013 23:58

আজকের পর্বঃ বেইজ ক্যাম্প-আফ্রিকান আক্সপেরিয়ান্স, প্রথম যাত্রা বিরতি
আমরা যারা সাফারি ভ্রমনে যাব তারা সকলেই নির্দিষ্ট জায়গায় কিউ করে দাঁড়ালাম। নির্ধারিত সময়ে আমাদেরকে পিক আপ করার জন্যে বিশেষ সাফারি ট্র্যাক, একজন রেঞ্জার আর একজন গাইড চলে এলেন। এখানকার বেশির ভাগ গাইড এবং রেঞ্জারের আফ্রিকার জঙ্গলে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমাদের দলে সদস্য সংখ্যা ছিল ১৫ জন। তার মধ্যে পিচ্চি কয়েকজনও ছিল। গাইড সবাইকে সিট বেল্ট বাধার কথা বললেও আমরা কয়েকজন ছবি তুলার অজুহাতে সিট বেল্ট না পরার অনুমতি নিলাম। তবে পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় অবশ্যই সিট বেল্ট বাধতে হবে বলে হুশিয়ারি দিল গাইড।
ধিরে ধিরে চলতে শুরু করল ট্রাক আর আমরাও ধিরে ধিরে প্রবেশ করছিলাম গহীন অরন্যে। পাহাড়ি রাস্তার ঝাঁকুনিতে নড়ে উঠছিল সব কিছু। তবে এধরনের ট্রেইলে আমি এর আগেও অনেকবার এরকম গাড়িতে ছড়েছি। তাই আমার তেমন সমস্যা হচ্ছিল না। প্রবেশ পথে একটি আফ্রিকান হাতির ছোট দল চোখে পড়ল। দূর থেকে এরা আমাদের উপর সতর্ক দৃষ্টি নিক্ষেপ করছিল।

এর পর কিছু দূর গিয়ে চোখে পড়ল কয়েকটি গণ্ডার। সাথে থাকা বাচ্চা গুলো চীৎকার শুরু করল রাইনো! রাইনো!!! এরা হয়ত আগে থেকেই এদের সাথে পরিচিত। তবে মজার ব্যপার হল, কিছুক্ষণ পরে আমার সামনে থাকা একটা পিচ্চি আমাকে দেখিয়ে ওর মাকে বলল, look mum! It’'s a men rhino!! হয়ত ছবি তুলার সময় আমার ক্যামেরা ফেইসে নেয়ায় ক্যামেরার ল্যেন্স দেখে আবিষ্কার করেছে। ওমা, এরও দেখি নাকে শিং!

বেচারার শিং কেটে নিয়েছে চোর (হাতির দাতের মত এদের শিং চুরি হয় অহরহ)!! সম্ভবত বেচারা জঙ্গলে থাকা কালীন সময়েই চোরের কবলে পড়েছিলেন

আরও একজনের ছবি

এক সাথে দুইজন
এর পর অনেক গুলো চিত্রা হরিন, জেব্রা, banteng-এর পাল দেখে চোখ জুড়িয়ে গেল। মনে পড়ল কবি মতিউর রাহমান মল্লিক ভাইয়ের লেখা গান, “তোমার সৃষ্টি যদি হয় এত সুন্দর, না জানি তাহলে তুমি কত সুন্দর, কত সুন্দর”। স্রষ্টার স্বরনে মাথা নুয়ে এল।

চিত্রা হরিন

আজকের পর্বঃ বেইজ ক্যাম্প-আফ্রিকান আক্সপেরিয়ান্স, প্রথম যাত্রা বিরতি
আমরা যারা সাফারি ভ্রমনে যাব তারা সকলেই নির্দিষ্ট জায়গায় কিউ করে দাঁড়ালাম। নির্ধারিত সময়ে আমাদেরকে পিক আপ করার জন্যে বিশেষ সাফারি ট্র্যাক, একজন রেঞ্জার আর একজন গাইড চলে এলেন। এখানকার বেশির ভাগ গাইড এবং রেঞ্জারের আফ্রিকার জঙ্গলে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমাদের দলে সদস্য সংখ্যা ছিল ১৫ জন। তার মধ্যে পিচ্চি কয়েকজনও ছিল। গাইড সবাইকে সিট বেল্ট বাধার কথা বললেও আমরা কয়েকজন ছবি তুলার অজুহাতে সিট বেল্ট না পরার অনুমতি নিলাম। তবে পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় অবশ্যই সিট বেল্ট বাধতে হবে বলে হুশিয়ারি দিল গাইড।
ধিরে ধিরে চলতে শুরু করল ট্রাক আর আমরাও ধিরে ধিরে প্রবেশ করছিলাম গহীন অরন্যে। পাহাড়ি রাস্তার ঝাঁকুনিতে নড়ে উঠছিল সব কিছু। তবে এধরনের ট্রেইলে আমি এর আগেও অনেকবার এরকম গাড়িতে ছড়েছি। তাই আমার তেমন সমস্যা হচ্ছিল না। প্রবেশ পথে একটি আফ্রিকান হাতির ছোট দল চোখে পড়ল। দূর থেকে এরা আমাদের উপর সতর্ক দৃষ্টি নিক্ষেপ করছিল।

এর পর কিছু দূর গিয়ে চোখে পড়ল কয়েকটি গণ্ডার। সাথে থাকা বাচ্চা গুলো চীৎকার শুরু করল রাইনো! রাইনো!!! এরা হয়ত আগে থেকেই এদের সাথে পরিচিত। তবে মজার ব্যপার হল, কিছুক্ষণ পরে আমার সামনে থাকা একটা পিচ্চি আমাকে দেখিয়ে ওর মাকে বলল, look mum! It’'s a men rhino!! হয়ত ছবি তুলার সময় আমার ক্যামেরা ফেইসে নেয়ায় ক্যামেরার ল্যেন্স দেখে আবিষ্কার করেছে। ওমা, এরও দেখি নাকে শিং!

বেচারার শিং কেটে নিয়েছে চোর (হাতির দাতের মত এদের শিং চুরি হয় অহরহ)!! সম্ভবত বেচারা জঙ্গলে থাকা কালীন সময়েই চোরের কবলে পড়েছিলেন

আরও একজনের ছবি

এক সাথে দুইজন
এর পর অনেক গুলো চিত্রা হরিন, জেব্রা, banteng-এর পাল দেখে চোখ জুড়িয়ে গেল। মনে পড়ল কবি মতিউর রাহমান মল্লিক ভাইয়ের লেখা গান, “তোমার সৃষ্টি যদি হয় এত সুন্দর, না জানি তাহলে তুমি কত সুন্দর, কত সুন্দর”। স্রষ্টার স্বরনে মাথা নুয়ে এল।

চিত্রা হরিন

অনেক অনেক দূর থেকে তুলা আরেকজন

banteng দেখতে অনেকটা হরিনের মত হলেও এরা আসলেই কি হরিন?

আরও একজনের ছবি

ঘাস খতে ব্যাস্ত একজন

ঘাস খতে ব্যাস্ত আরও একজন
পথিমধ্যে কয়েকটা বন্য মহিষ দেখে নানু বাড়ির মহিষের কথা মনে পড়ে গেল। আমাদের কয়েকজন সফর সঙ্গী মহিষ আমাদের গৃহপালিত পশু শুনে অবাক হয়েগেল। অনেকেই তখন আমাকে এমন ভাবে প্রশ্ন করা শুরু করল যেন আমিই তাদের গাইড। এই প্রশ্ন কর্তার দলে স্বয়ং গাইড বাবাজিও ছিলেন! পথে কয়েকটি জেব্রাকে দেখলাম সমতল ভূমিতে ঘাস খেতে। দারুন লাগছিল এদের।

অনেক দূর থেকে জুম করে নেয়া জেব্রার ছবি

ঘাস খেতে ব্যাস্ত একজন
এভাবে হেলে দুলে আমাদের বহনকারী গাড়ি পাহাড়ি আঁকা-বাঁকা উচু-নিচু পথ মাড়িয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল সামনের ধিকে। হঠাৎ কানে বেজে উঠল কুকুরের ঘেউ ঘেউ। গাইডের মাধ্যমে জানলাম এরাই হিংস্র আফ্রিকান হান্টিং ডগ।

আফ্রিকান হান্টিং ডগ
গাড়ির ঝাকুনি আর রোদের তীব্রতায় আমরা বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়ছি যখন ঠিক তখনই গাইড জানাল আমরা পাহাড়ের চূড়ায় চলে এসেছি। আর পাঁচ মিনিট পরেই যাত্রা বিরতি পাচ্ছি। কিন্তু পাহাড়ে আমাদের লাঞ্চ আর আফ্রিকান মিউজিক শো'র জন্যে নির্ধারিত বাংলোতে যাওয়ার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে বেশ কয়েকটি জিরাফ আমাদের গাড়ির সামনে এসে আমাদের গাড়ি ঘিরে ধরায় আমাদের গাড়িও থেমে গেল। এদের কারনে আমাদেরকে প্রায় ১০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে হল। এরা যখন একবারেই রাস্তা দিচ্ছিল না ঠিক তখনই ঘটল মজার ঘটনা। কোথা থেকে যেন কয়েকটা সিংহ গর্জন করে উঠল। পরে জানতে পারলাম জঙ্গলের ভিতরে কোন ধরনের হর্ন বাঝানু নিষেধ। তবে বন্য প্রাণী পথ রোধ করে দাঁড়ালে এরা হরনের পরিবর্তে বিভিন্ন বন্য প্রাণীদের গর্জন বাঝায়। বেশ মজা পেলাম।

উনাকে কে কে চিনতে পারেন নি?
এই ছবিটি প্রমান করছে আমরা সমতল ভূমি থেকে কতটা উপরে চলে এসেছি

পেছন থেকে তুলা ছবি

আরও একটি ছবি
এদের কাছ থেকে মুক্তি পেয়ে আমরা চলে এলাম এখানকার সবচেয়ে উঁচু পাহাড়ে। এখানে আমাদেরকে ৩০ মিনিটের যাত্রা বিরতি দেয়া হল। বিশ্রাম নেয়ার জন্যে ভাল ব্যাবস্থা আছে এখানে। তা ছাড়া এখান থেকে পুরো এলাকা দেখা যায় ৩৬০ ডিগ্রি এঙ্গেলে। মজার ব্যাপার হচ্ছে এখান থেকে দূর সমুদ্র আর জাহাজ গুলো খুব ভাল ভাবে চোখে পড়ল।

পাহাড়ের চুড়ার বাংলোর সামন থেকে নিচের সমভূমির দৃশ্য, এই জায়গাটিতেই ছিল আমাদের প্রথম যাত্রা বিরতি।

banteng দেখতে অনেকটা হরিনের মত হলেও এরা আসলেই কি হরিন?

আরও একজনের ছবি

ঘাস খতে ব্যাস্ত একজন

ঘাস খতে ব্যাস্ত আরও একজন
পথিমধ্যে কয়েকটা বন্য মহিষ দেখে নানু বাড়ির মহিষের কথা মনে পড়ে গেল। আমাদের কয়েকজন সফর সঙ্গী মহিষ আমাদের গৃহপালিত পশু শুনে অবাক হয়েগেল। অনেকেই তখন আমাকে এমন ভাবে প্রশ্ন করা শুরু করল যেন আমিই তাদের গাইড। এই প্রশ্ন কর্তার দলে স্বয়ং গাইড বাবাজিও ছিলেন! পথে কয়েকটি জেব্রাকে দেখলাম সমতল ভূমিতে ঘাস খেতে। দারুন লাগছিল এদের।

অনেক দূর থেকে জুম করে নেয়া জেব্রার ছবি

ঘাস খেতে ব্যাস্ত একজন
এভাবে হেলে দুলে আমাদের বহনকারী গাড়ি পাহাড়ি আঁকা-বাঁকা উচু-নিচু পথ মাড়িয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল সামনের ধিকে। হঠাৎ কানে বেজে উঠল কুকুরের ঘেউ ঘেউ। গাইডের মাধ্যমে জানলাম এরাই হিংস্র আফ্রিকান হান্টিং ডগ।

আফ্রিকান হান্টিং ডগ
গাড়ির ঝাকুনি আর রোদের তীব্রতায় আমরা বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়ছি যখন ঠিক তখনই গাইড জানাল আমরা পাহাড়ের চূড়ায় চলে এসেছি। আর পাঁচ মিনিট পরেই যাত্রা বিরতি পাচ্ছি। কিন্তু পাহাড়ে আমাদের লাঞ্চ আর আফ্রিকান মিউজিক শো'র জন্যে নির্ধারিত বাংলোতে যাওয়ার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে বেশ কয়েকটি জিরাফ আমাদের গাড়ির সামনে এসে আমাদের গাড়ি ঘিরে ধরায় আমাদের গাড়িও থেমে গেল। এদের কারনে আমাদেরকে প্রায় ১০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে হল। এরা যখন একবারেই রাস্তা দিচ্ছিল না ঠিক তখনই ঘটল মজার ঘটনা। কোথা থেকে যেন কয়েকটা সিংহ গর্জন করে উঠল। পরে জানতে পারলাম জঙ্গলের ভিতরে কোন ধরনের হর্ন বাঝানু নিষেধ। তবে বন্য প্রাণী পথ রোধ করে দাঁড়ালে এরা হরনের পরিবর্তে বিভিন্ন বন্য প্রাণীদের গর্জন বাঝায়। বেশ মজা পেলাম।

উনাকে কে কে চিনতে পারেন নি?


পেছন থেকে তুলা ছবি

আরও একটি ছবি
এদের কাছ থেকে মুক্তি পেয়ে আমরা চলে এলাম এখানকার সবচেয়ে উঁচু পাহাড়ে। এখানে আমাদেরকে ৩০ মিনিটের যাত্রা বিরতি দেয়া হল। বিশ্রাম নেয়ার জন্যে ভাল ব্যাবস্থা আছে এখানে। তা ছাড়া এখান থেকে পুরো এলাকা দেখা যায় ৩৬০ ডিগ্রি এঙ্গেলে। মজার ব্যাপার হচ্ছে এখান থেকে দূর সমুদ্র আর জাহাজ গুলো খুব ভাল ভাবে চোখে পড়ল।

পাহাড়ের চুড়ার বাংলোর সামন থেকে নিচের সমভূমির দৃশ্য, এই জায়গাটিতেই ছিল আমাদের প্রথম যাত্রা বিরতি।